কক্স টিভি ডেস্ক :
শাহজাহান আনসারী-ক্রীড়া সংগঠক নামধারী কক্সবাজারের শীর্ষ এক ইয়াবা গডফাদার। সূ-দীর্ঘ এক যুগ ধরে দেশ বিধ্বংসী ইয়াবা ব্যবসা করে টাকার পাহাড় গড়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল কক্সবাজারের ক্রীড়াঙ্গন ও হোটেল ব্যবসা।। অবশেষে জানের ভয়ে আত্ম স্বীকৃত ইয়াবা ব্যবসায়ী শাহজাহান আনসারী আত্মসমর্পণ করে প্রাণ ও অবৈধ সম্পদ রক্ষায় শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শেষ পরিণতিতে কূখ্যাত ইয়াবা ডন শাহজাহান আনসারী এখন জেলে।
ক্রীড়াবিদ-ক্রীড়া সংগঠক নামধারী একটি অসাধু চক্রকে ছায়ার মতো রেখে যে তিন বেলা খাবার খেতো শহরের নামি-দামি হোটেলে , সে এখন তারই ইয়াবা বাড়ির পাশে কারা প্রকোষ্টে আগাম জাহান্নামের প্রহর গুনছে। কিন্তু বসে নেই- ইয়াবা পরিবারের অপরাপর সদস্যরা। ঝিলংজার পশ্চিম লারপাড়ার আনসারী পরিবারের পাঁচ আলিশান ইয়াবা বাড়ি, কয়েকটি লেটেস্ট মডেলের প্রাইভেট গাড়ি, ইয়াবার আড়ালে কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগের কক্সবাজারের রমরমা হোটেল ব্যবসা, সিমেন্ট ব্যবসা, ঠিকাধারী ও বাজার ইজারা খাতে নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তার মেজ ভাই তালিকাভূক্ত ইয়াবা কারবারি কাশেম আনসারী ও ছোট ভাই সুফিয়ান আনসারী।
অন্যদিকে আত্মসমর্পণের মাস দু’য়েক আগেই ইয়াবা ডন, সুচতুর শাহজাহান আনসারী কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন থেকে নামে বে-নামে প্রায় কোটি টাকা বিনিয়োগে কেনা ১৩ টি ক্লাব সংগঠনেরও আগাম ব্যবস্থা করে গেছেন। ডিএসএ ও ডিএফএ’র সর্বশেষ ক্লাব প্রতিনিধি হাল নাগাদে এই ১৩ টি নিবন্ধিত ক্লাবের প্রতিনিধি করে গেছেন তার ভাই,স্ত্রী, নিকটাত্মীয় ও দু’জন সাবেক ফুটবলার ইয়াবা সহযোগীর নামে।
এখন সবার জিঙ্গাসা- ইয়াবায় ভর করে অর্জিত পান দোকানী, বাস হেলপার শাহজাহানের অঢেল সম্পদ ও কেনা স্পোর্টস ক্লাব গুলোর মালিকানা কার হাতে যাবে ? ইয়াবা ডন শাহজাহানের অঢেল সম্পদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে এবং অবৈধ অর্থে কেনা স্পোর্টস ক্লাব বাতিলের দাবিতে সহসাই আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন জেলার দু’ সিনিয়র ফুটবলার মাসুদ ও জাহেদ।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি শাহজাহান আনসারীর সেকেন্ড হোম খ্যাত কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ট রুহুল আমিন স্টেডিয়াম কার্যালয় ও মাঠ ঘুরে দেখা যায়-এতদিনের তার উত্থানের সহযোগীদের উল্টো সুর। সবাই ইয়াবা কারবারি শাহজাহান আত্মসর্মপণ আলাপ-চারিতায় গা বাঁচানোর ফন্দি, আবার অনেকেই তার অপকর্মের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার।
সূত্র জানায়-ঝিলংজার পশ্চিম লারপাড়ার জামায়াত নেতা নুর আহমদ আনসারীর ৩য় পুত্র শাহজাহান আনসারী। মাত্র ক’বছর আগেই শাহজাহান ছিল ছোট পান দোকানী, গাড়ির হেলপার। ইয়াবার বাণিজ্য চাকায় ঘুরতে ঘুরতে শাহজাহান আনসারী বনে যান দেশসেরা ইয়াবা ডন। হয়ে যান শত কোটি টাকার মালিক।
নিজেকে সাদা করতে ইয়াবা ডন শাহজাহান বেছে নেন জেলা প্রশাসকের পরিচালনাধীন জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও বাফুফের নিয়ন্ত্রিত জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনকে। ইয়াবার টাকায় ভর করে বনে যান ডিএফএ’র ভাইস-প্রেসিডেন্ট। অভিযোগ রয়েছে- সদর উপজেলার সাবেক এক ইউএনও’কে নগদ তিন লাখ টাকা উৎকোচ দিয়ে চকরিয়া-টেকনাফ যৌথ বংশের শাহজাহান আনসারী সাবেক জাতীয় তারকা ফুটবলার মামুন, মাসুদ, বিপ্লবদের পেছনে ফেলে বাগিয়ে নেন সদর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার র্মযদাকর সাধারন সম্পাদকের পদ। ধরাকে সরা জ্ঞান করে ইয়াবা কারবারি শাহজাহান আনসারী হয়ে উঠেন জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও ডিএফএ’র যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কান্ডারী।

সাবেক বেশ ক’জন কৃতি ফুটবলার লজ্জার মাথা খেয়ে শাহজাহানের ইয়াবা পকেটে চেয়ে থাকতো। তার ইয়াবা টাকার স্পন্সরের দিকে তাকিয়ে থাকতো ডিএসএ ও ডিএফএর বেশ ক’জন অসাধু কর্তা। ইয়াবা শাহজাহানের খপ্পরে পড়ে বেশ অসময়ে ফুটবল বুট মাঁচায় তুলেছে জেলার বেশ ক’জন প্রতিশ্রুতিশীল ফুটবলার।
শেষ র্পযন্ত প্রশাসনের ইয়াবা বিরোধী কড়া অবস্থানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের হাতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ পাইলট হাই স্কুল মাঠে কক্সবাজারের ক্ষমতাধর, আলোচিত শাহজাহান আনসারী ১০২ জনের সাথে আত্মœসর্মপণ করে।