প্রতারক ফাঁদ-০২
===============
প্রতারক চক্র এখন গ্রামে!
————————-
লিটন কুতুবী,
———–
হ্যালো আমি মেজর মিল্কী (ছদ্মনাম) বলছি। আমার ছোট ভাইকে তোমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে নাম্বারটা সংগ্রহ করেছি। আমি এখন ভালো পজিশনে আছি। তাই বলছি তোমার কোন আত্মীয় এসএসসি/এইচএসসি পাস করা কোন যুবক থাকলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে বলবেন। কোন টাকা-পয়সা লাগবে না। ফিট হলেই চলবে। আসরের নামাজ পড়তে মসজিদের প্রবেশের মুহুর্তে এমন কল পেয়ে প্রথমে বিরক্ত হন কালাম (ছদ্মনাম)। আমার এই রকম কেউ নেই বলে উত্তর দিয়ে কল কেটে দিয়ে নামাজ আদায় করেন তিনি। মসজিদ থেকে বের হতেই আবার রিং বাজে মোবাইলে। মোবাইল হাতে নিয়ে দেখেন একই ব্যক্তির কল। এবার সরাসরি বলে দেন ভাই আমার কেউ নেই,অন্য কাউকে বলে দেখুন। কিšু‘ অপর প্রান্তের পরিপক্ক ব্যক্তিটি হাল ছাড়েনি, এক প্রকার সুপার গার্মের মত লেগে থাকেন কালামের পেছনে। বার বার কল করে বিশেষ অনুরোধ করার এক সময় কালামের মন বরফের মত গলে যায়। কথা দেয় দুই জন দেবে। মসজিদ থেকে বাড়িতে এসে নিজের স্ত্রী ও দুই চাচত ভাইকে বিষয়টি বলেন। এরপরের চিত্র অন্য রকম। এটাইত সুযোগ মনে করে স্ত্রী নিজের ছোট ভাই শহীদকে (ছদ্মনাম) চাকুরি দিতে বলেন। প্রথমে বসকে বসিভূত করার জন্য শুটঁকি মাছ কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা নেয়। তাদেরকে চট্টগ্রাম ফ্রি-পোর্ট এলাকায় নৌবাহিনীর মেডিকেল হাসপাতালে বড়ি পরীক্ষার কথা বলে নিয়ে যায়। কৌশলে বড়ি পরীক্ষাও করে। এরপর শুরু করে অফিসারদের খুশি করার জন্য টাকা খুজতে থাকে। দফায় দফায় টাকা নিতে নিতে দুই লাখ টাকা কিভাবে নিয়ে গেছে তা তারা বুঝতে পারেনি। এমন কৌশল সবার ক্ষেত্রে ঘটেছে। এ পর্যন্ত অর্ধ শত যুবক থেকে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ প্রতারক কক্সবাজার জেলায় একটি বড় ধরণের সিন্ডিকেট তৈরী করেছে। বিশেষ করে কুতুবদিয়া দ্বীপের অবসরপ্রাপ্ত সেনা,নৌ,বিমান বাহিনীর সদস্যদের নাম্বার ও নাম সংগ্রহ করে প্রতারকচক্র সুকৌশলে বেকার যুবকদের নাম্বার সংগ্রহ করে ফোন দিয়ে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে বিকাশ ও নগদে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ চক্রের মুল হুতা কুতুবদিয়া দ্বীপের বড়ঘোপ ইউনিয়নের মনোহরখালীর বানু বাপের পাড়ার ফজল করিমের ছেলে সাবেক নৌ সদস্য মোরশেদ আলম মোর্শেদ। সে প্রতারণার ফাঁেদ জাল ফেলে নিজে এক ফাঁেক পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। আদালতের একটি মামলায় দেড় বছরের সাজাপ্রাপ্ত দন্ডিত হয়ে বর্তমানে মোর্শেদ পুলিশের নিকট আটক আছে। এ খবর পেয়ে তার চক্রের অন্যান্য সদস্যের নাম পুলিশের নিকট প্রকাশ করায় হাবিব,ওমর,আজিজ,শাকের,শফি,মফিজ,এনাম,বাতেনসহ দুই ডজন প্রতারক আতœগোপনে চলে গেছে। তবে পুলিশ তাদের ঠিকানা মোতাবেক সোর্স লাগালে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। প্রতারক চক্রের হাতে প্রতারিত হওয়া ব্যাক্তিগণ ক্ষতিগ্রস্ত যুবকরা আদালতে মামলা করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা নিশ্চিত করেন।