চকরিয়া অফিস:
পিতা-মাতাকে মারধর ও নিজ বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগে পাষন্ড পুত্রের বিরুদ্ধে মামলা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে বড় ভাইকে গতিরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। এসময় বড় ভাইয়ের কাছ থেকে অস্ত্রের মুখে লুট করে নিয়েগেছে নগদ ২লাখ ১৩ হাজার টাকা। ২৭নভেম্বর (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চকরিয়ার চিরিংগা মাতামুহুরী ব্রীজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগে জানাগেছে, চকরিয়া থেকে পার্বত্য লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের নয়াপাড়া গ্রামে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন মৃত আজম উল্লাহ’র পুত্র হাজী আবুল হোছেন (৮০)। তার সংসারের ৩ ছেলের মধ্যে বড় ছেলে মো: শাহাব উদ্দিন ও ছোট ছেলে মো: সাকেরুল ইসলামে প্রবাসে (বিদেশে) থাকা অবস্থায় মেজ ছেলে মো: শেখাব উদ্দিনের ঠিকানায় যাবতীয় আয়-উপার্জনের টাকা পাঠাতেন। এ সুবাদে ৩ ভাইয়ের নামে জমি-জমা, দোকান ও সমিল ক্রয়ের কথা বলে পরিবারের সদস্যদের অজান্তে মেজ ছেলে শেখাব উদ্দিনের একার নামেই ক্রয় করেন এবং খতিয়ানসহ যাবতীয় কাগজপত্র সৃজন করেন।
সম্প্রতি বড় ছেলে দেশে ফিরলে দেখতে পান ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত বসতবাড়ি, পৌরসভার মৌলভীরকুম বাজার আতব্বরপাড়া এলাকার ৮শতক জমি, চিরিংগা আনোয়ার হোসেন কন্ট্রাক্টারের বাড়ি লাগোয়া ১০ শতক জমি ও সমিলসহ সব কিছুই প্রতারণার মাধ্যমে মেজ ছেলের নামে করে ফেলেন। এমনকি আরো একটি জমি ক্রয়ের কথা বলে মায়ের ব্যবহৃত ৪ লাখ টাকা মূল্যের ৮ভরি স্বর্ণালংকার ও পিতার নামীয় ৬টি গরু বিক্রি করে নগদ ৩ লাখ টাকাসহ মোট ৭লাখ টাকা দেন মেজ ছেলেকে। তাও তার একক নামে ক্রয় করেন। এসব বিষয়ে স্থানীয় ফাইতং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ওরফে মগ ফারুক, সহসভাপতি মিন্টু মিলে সুষ্টু বিচারের আশ্বাস দিয়ে পিতা-মাতা ও বড় ভাইয়ের কাছ থেকে একটি ৩শত টাকার মূল্যের স্ট্যাম্প নেন। পরবর্তী মেজ ছেলে শেখাবের গোপন যোগসাজসে ১লাখ টাকার বিনিময়ে শালিসকারদের কাছ থেকে ওই স্ট্যাম্প ক্রয় করেন মেজ ছেলে। অভিযোগ উঠেছে, এসব বিষয়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সম্প্রতি মেজ ছেলে ও পুত্র বধুর নেতৃত্বে পিতা-মাতাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এনিয়ে গত ২৫ নভেম্বর’১৮ইং পিতা বাদী হয়ে মেজ ছেলে ও পুত্রবধুর বিরুদ্ধে লামা থানায় মামলা করেন হতভাগা বয়োবৃদ্ধ পিতা হাজী আবুল হোছেন (৮০)। এদিকে ওই মামলায় ক্ষিপ্ত হয়ে বড় ভাই শাহাব উদ্দিনকে প্রাণে হত্যার চেষ্টায় পরিকল্পনা নেয়।
সর্বশেষ ২৭ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মোটর সাইকেল যোগে চকরিয়া সদরে আসার পথে মেজ ছেলে শেখাব উদ্দিনের শ্বাশুড় চকরিয়া পৌরসভা ২নং ওয়ার্ডের জালিয়াপাড়া গ্রামের সোলতান আহমদের নেতৃত্বে হালকাকারা জালিয়াপাড়া এলাকার বেশ কিছু ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে মাতামুহুরী ব্রীজ এলাকায় অতর্কিত অবস্থায় গাড়ী গতিরোধ করে ধারালো অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। প্রকাশ্য দিবালোকে বেধম মারধরের এক পর্যায়ে ভাগিনার কাতার ভীসার জন্য নিয়ে যাওয়া নগদ ২লাখ টাকা ও নিজ পকেটে ব্যবহৃত ১৩ হাজার টাকাসহ ২লাখ ১৩ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল সেট জোর পূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তাকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এনিয়ে মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানান হামলার শিকার শাহাব উদ্দিন