চকরিয়া প্রতিনিধিঃ
কক্সবাজার শহরের উত্তর রুমালিয়ার ছড়ায় ভাড়া বাসা থেকে সাধন কান্তি দে (৩০) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেন পুলিশ। সে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড নতুন হিন্দু পাড়া গ্রামের গোপাল কান্তি দে’র পুত্র। সাধন গত পনের বছর ধরে কক্সবাজার শহরে ব্যবসা-বানিজ্য করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। গত শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে উদ্ধারকৃত লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। নিহতের শরীরে পর্যাপ্ত আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। স্বজনদের দাবি তাকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে। জানা যায়, সাধান কান্তি গত দুবছর ধরে উত্তর রুমালিয়ার ছড়া হাসেমিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন গুধার পাড়া নামক এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। ওখানে থেকে সে তুষের লাকড়ীর ব্যবসা চালিয়ে যেতেন। নিহতের ছোটভাই বিশ্বজিত কক্স টিভিকে জানান, কক্সবাজার শহরে তার ভাই যুগের অধিক সময় পার করে আসলেও এপর্যন্ত কারো সাথে বিতর্কের খবর পাওয়া যায়নি। বিশ্বজিত আরো বলেন, সাধন ভাড়া বাসাটি নেওয়ার পর বাসার মালিক ইয়াসিন সিকদারের চিকিৎসার জন্য হঠাৎ মোটা টাকার প্রয়োজন হয়। ওসময় পুরো বাসাবাড়ি সাধনের কাছে বন্ধক রেখে বাসার মালিকের স্ত্রী তার কাছ থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা নেয়। সম্প্রতি ওই টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে বাসার মালিক পক্ষ ও সাধনের মধ্যে বিভেদ চলছিল। এছাড়া সে চকরিয়ায় বাড়ি এসে বিবাহ করতে প্রায় ১০-১৫ ভরি স্বর্ণ কিনে বাসায় রাখছিলেন। স্বজনরা দাবি, লেনদেন বিষয় ও জমানো সম্পদগুলো ভোগ করতে তাকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধায় ওই বাসায় উপুড় করা অবস্থায় সাধনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। উপস্থিত লোকজন ধারণা করেন তাকে আরো কয়েকদিন আগে অত্যন্ত তীক্ষ্ণ বুদ্ধি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। লাশের পাশে টেপসহ তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেন পুলিশ, এসময় কিছু দুরে একটি মিনি ফ্যান চলমান ছিল। কিন্তু তার ড্রয়ারে থাকা বাসা বন্ধকের কাগজপত্র ও স্বর্ণালঙ্কারগুলো পাওয়া যায়নি। লাশ উদ্ধারকালীন সময়ে ড্রয়ার খুলাবস্থায় চাবি লাগানো ছিল বলেও জানান স্বজনরা। বৃহস্পতিবারে তার এক বন্ধুকে কিছু টাকা ধার দেওয়ার কথা ছিল। বারবার সাধনের মোবাইলে ফোন দিয়েও সাড়া না পাওয়ায় ওই বন্ধু সরাসরি বাসায় এসে তার লাশ দেখতে পায়। তাৎক্ষণিক বিষয়টি সে পার্শ্ববর্তী লোকজনদের জানান। পরে স্বজনদের উপস্থিতিতে লাশটি উদ্ধার করেন থানা পুলিশ। কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, উত্তর রুমালিয়া ছাড়ার একটি ভাড়া বাসা থেকে সাধন নামের যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। উদ্ধার করা মোবাইল ফোন থেকে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে আসলেই বিস্তারিত জানা যাবে বলে তিনি জানান।