আজ, শনিবার | ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



চকরিয়ায় ভয়াবহ লোডশেডিং, অসহ্য গরমে বির্পযস্থ জনজীবন

চকরিয়ায় ভয়াবহ লোডশেডিং, অসহ্য গরমে বির্পযস্থ জনজীবন

ফয়সাল চৌধুরী, সম্পাদক কক্স টিভিঃ

রমজান মাস জুড়ে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকার শহর থেকে গ্রামের প্রতিটি জনপদে বেড়েছে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং। দিনরাত ২৪ ঘন্টা মিলিয়ে বর্তমানে প্রতিদিন ১২ ঘন্টাও বিদ্যুত পাওয়া যাচ্ছেনা। একদিকে অসহনীয় গরম অপরদিকে ঘনঘন লোডশেডিং বির্পযস্থ করে তুলেছে জনজীবনে।
পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক স্থানীয় একাধিক লোকজন অভিযোগ করেছেন, আগে ঠিকমতো পল্লী বিদ্যুত সরবরাহ থাকলেও পবিত্র রমজান মাসের শুরুতে চকরিয়া উপজেলায় বৃদ্ধি পেয়েছে ভয়াবহ লোডশেডিং। বিশেষ করে সেহেরী ইফতার ও তারাবির নামাজের সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে তীব্র গরম অন্যদিকে ঘনঘন লোডশেডিং চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোজাদারদের। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ করেও কোন সুরাহা পাওয়া যাচ্ছে না।
ওয়াপদা ও পল্লী বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং কারণে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ কিন্তু সরবরাহ প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ায় সরকারের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।

রোজায় সুষ্ঠ ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে ধর্মপ্রাণ মুসলিরা বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন।
সারাদিন রোজা রেখে ধর্মপ্রাণ জনগন তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এতে বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুতের
ভেল্কিবাজির কারনে মসজিদে ঠিকমতো নামাজ পড়তে পারছেনা ধর্মপ্রাণ মুসল্লী। তীব্র গরম আর বিদ্যুতের ভেল্কিবাজীতে অসহ্য হয়ে উঠেছে জনজীবন। বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার কারণে পবিত্র রমজান মাসে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীসহ সর্বসাধারণ চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

এদিকে বিদ্যুতের ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবস্যা বাণিজ্যে ধস, ব্যাংক, বীমা বিভিন্ন কলকারখানা, ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মার্কেট, কম্পিউটার প্রতিষ্ঠান গুলো ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এতে সাধারণ জনগণও মারাত্মক ক্ষতির শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে লোডশেডিংয়ের কারনে ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। বর্তমানে সেচ মৌসুম শেষ হয়েছে। এরপরও ঘনঘন লোডশেডিং জনজীবনকে বির্পযস্থ করে তুলেছে। তার সাথে বিদ্যুত সেবার মান সহনীয় রাখার দাবি জানিয়েছে তারা।

চকরিয়া বিদ্যুত বিতরণ বিভাগ জানায়, চকরিয়া বিদ্যুত বিভাগের আওতায় প্রায় ২২হাজার গ্রাহক রয়েছে। এসব গ্রাহকের চাহিদা পূরণ করতে ৯ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু গ্রাহকরা বিদ্যুত বিভাগ থেকে বিদ্যুত পাচ্ছেন ৮ মেগাওয়াট, আরও ১ মেগাওয়াট বিদ্যুত ঘাটতি রয়েছে। ২৪ ঘন্টায় ৮ মেগাওয়াট বিদ্যুত দিয়ে গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করতে হচ্ছে।

অফিসের সংশ্লিষ্টরা আরো জানায়, চকরিয়া পৌরশহরের কোচপাড়া পাওয়ার ট্রান্সমিটার থেকে ২২ হাজার গ্রাহককে ৫টি লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুত বিতরণ করা হয়। এরমধ্যে ৩টি লাইন চালু থাকলেও অন্য ২টি লাইন বন্ধ রাখতে হয়। গ্রাহকদের মাঝে ২৪ ঘন্টা বিদ্যুতের চাহিদা পুরণ করতে বিদ্যুত মন্ত্রনালয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে বরাদ্দও মিলেছে। কিন্তু কিছু মালামাল আসতে দেরি হচ্ছে, সেই কারনে দ্রুত সময়ে কাজ করা যাচ্ছে না। একদিকে  তীব্র দাপদাহ অন্যদিকে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বিদ্যুত বিভাগ গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এ দুর্ভোগ লাগবে বিদ্যুত বিভাগ আরও এগিয়ে আসতে হবে।

পবিত্র রমজান মাসে ইফতার এবং তারাবির নামাজের সময় প্রতিনিয়ত বিদ্যুত চলে যাচ্ছে। শুধু তা নয় রাতেও বিদ্যুৎ না পেয়ে কষ্টে জীবন অতিবাহিত করতে হচ্ছে। এতে সরকারের উন্নয়ন প্রশ্ন বিদ্ধ হচ্ছে।

জানতে চাইলে চকরিয়া বিদ্যুত বিতরণ বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী মো.সাইদুজ্জামান বলেন, প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। তারমধ্যে অতিরিক্ত গরম। বিদ্যুতের চাহিদাও রয়েছে। বরাদ্দের তুলনায় বাড়তি বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে হিমশীম খেতে হচ্ছে বিদ্যুত বিভাগকে। এরপরও দিনে শতভাগ বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করে রাতের মধ্যে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। আশাকরি সহসা এই সমস্যা আর থাকবেনা।