ঢাকা: শত হাঁকডাক আর নানাবিধ ব্যবস্থার পরেও পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় তা যেন মহামারীর রূপ ধারণ করেছে। প্রতিটি পরীক্ষার প্রশ্নই ফাঁস হচ্ছে। এতে বঞ্চিত হচ্ছে মেধাবী শিক্ষার্থীরা, ধ্বংস হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা।
প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রশ্ন প্রণয়ন করে তা পরীক্ষার্থীর হাতে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষক-কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট থাকেন। আর এত সংখ্যক মানুষের সম্পৃক্ততায় প্রশ্নফাঁসের ঝুঁকিও অনেক বেশি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে প্রশ্ন প্রণয়নের চিন্তা করলেও সীমাবদ্ধতার কারণে তা এখনো পারছে না। তবে এবার সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে সে দিকেই এগোতে চায় সরকার।
প্রচলিত পদ্ধতিতে বোর্ডের কাজ শেষে বিজি প্রেসে প্রশ্ন ছাপা হয় এবং সেখান থেকেই উপজেলা পর্যায়ে চলে যায় বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন। প্রশ্ন প্রণয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে দুর্বলতার কথাও শোনা গিয়েছিল তার মুখে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রশ্নপত্র প্র্রণয়ন করেন নির্বাচিত ও প্রশিক্ষিত শিক্ষকরা, যাদের বলা হয় ‘সেটার’। কোন যোগাযোগ ছাড়া তারা সাত দিন বোর্ডে থেকে প্রশ্ন মডারেটরের হাতে দেন। মডারেটররা প্রশ্ন মডারেট করে সিলগালা করে দিয়ে যান। সেই প্রশ্ন বোর্ডের চেয়ারম্যানদের সভায় লটারি করা হয়। যেমন- ‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ এবং ‘ঘ’।
এসব প্রশ্ন সেট থেকে বিজি প্রেসের ক্ষমতা আছে দুই সেট প্রশ্ন ছাপানোর। শুধুমাত্র খামের উপর লটারি করে নির্ধারণ করা হয় কোন দুই সেট ছাপানো হবে। এ পর্যায় পর্যন্ত বোর্ডের চেয়ারম্যানেরও প্রশ্ন দেখার সুযোগ নেই।
পরীক্ষার অন্তত দুই মাস আগে বিজি প্রেসে যাওয়ার পরে সেখানে ছাপানোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা প্রশ্ন দেখতে পারেন। চাহিদা অনুযায়ী সেখানে প্যাকেট হয়ে বিশেষ নিরাপত্তায় প্রশ্ন যায় জেলায়, জেলা থেকে থানায়। সাধারণত জেলায় রাষ্ট্রীয় ট্রেজারিতে থাকে সদরের প্রশ্ন, অন্যগুলো থানায় থাকে। যেখানে থানা থাকে না সেখানে সরকারি ব্যাংকের ভোল্টে সংরক্ষণ করা হয় প্রশ্ন।