
কুতুবদিয়া থানার নবাগত ওসি দায়িত্ব গ্রহণের পর একের পর এক নতুন চমক দেখিয়ে চলছেন। প্রথমে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেখালেন ওসি একেএম শফিকুল আলম চৌধুরী। নিজের চেয়ারে বসার আগে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সংরক্ষিত আসন চেয়ার বসালেন তিনি। শুধু তাই নয় কুতুবদিয়া আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুচ্ছফা বিকম কে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার’ এ স্লোগানকে ধারণ করে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাতে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া থানায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জন্য নিজের কক্ষে সংরক্ষিত চেয়ার স্থাপন করেছেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান নবাগত ওসি একেএম সফিকুল আলম চৌধুরী।
কুতুবদিয়া থানায় যোগদানের পরই শুক্রবার (৩ জুলাই) রাতে ওসির কক্ষে এ চেয়ার বসানো হয়।
থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান একেএম সফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, প্রতিদিন থানায় নানা কাজে অনেক মানুষ আসেন, তাদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধারাও থাকতে পারেন। সাধারণ মানুষের ভিড়ে অনেক সময় এই মুক্তিযোদ্ধাদের সমস্যা হতে পারে। তাদের সম্মান জানাতে আমার কক্ষে সংরক্ষিত চেয়ার স্থাপন করেছি। একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে একটি চেয়ার দিয়ে থানায় আগত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত রেখেছি। থানার সকল কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সব ফোর্সদের নির্দেশ দিয়েছি, যেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান দেয়া হয়। সংরক্ষিত চেয়ারেই শুধুমাত্র সম্মানিত মুক্তিযোদ্ধারাই বসবেন।
এই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আরো বলেন, থানার ডিউটি অফিসারকে নির্দেশ দেয়া আছে, কোনো মুক্তিযোদ্ধা আসলে যেন সরাসরি আমার কক্ষে নিয়ে আসেন। কারণ আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে এটা আমার নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করছি।
কুতুবদিয়া থানায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত আসন স্থাপন করার বিষয়টি ইতোমধ্যে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারাও খুব খুশি বলে মত প্রকাশ করেন-বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মাসুদ হোসেন কুতুবী।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আলী আকবর ডেইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুচ্ছফা (বিকম) বলেন, দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এখন দেশের কাছ থেকে আমরা তেমন কিছু চাই না। যদি একটা সম্মান পাই, তাহলে খুব ভালো লাগে। কুতুবদিয়া থানার নবাগত ওসি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আলাদা চেয়ার রাখার বিষয়টি জানার পরে অনেক ভালো লেগেছে এবং খুশি হয়েছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন বলেন, এটা খুবই ভাল উদ্যোগ। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করা না হলে, রাষ্ট্রকে সম্মান করা হবে না। আর রাষ্ট্রকে সম্মান করা না হলে, রাষ্ট্রের জনগণের সম্মানও ঠিকবে না। সুতরাং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সম্মান দিতে পারলে রাষ্ট্রকে সম্মানিত করা হয়। সুতরাং যে উদ্যোগ নেয়া হলো তা কুতুবদিয়া বাসীর জন্য ভালো উদ্যোগ। আমরা এটার সাধুবাদ জানাই। নবাগত ওসি হিসেবে সকলের সহযোগিতায় ভাল থাকবে এবং কুতুবদিয়া ভাল চলবে এটা আমি আশা করি।
কুতুবদিয়া থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম শফিকুল আলম চৌধুরী আরো জানান, কুতুবদিয়াবাসীকে শুরুতে জানান দিতে চাই-সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, ডাকাত, জলদস্যুদের আটক করতে মাননীয় পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসাইন স্যারের নির্দেশে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করব ইনশাল্লাহ। অপরাধী যতই শক্তিশালী হোক আইনের আওতায় আনা হবে। এতে কুতুবদিয়ার সকল মানুষের সহযোগিতা কামনা করছি।
নবাগত ওসি কুতুবদিয়া থানাকে একটি দালাল মুক্ত, চামচা মুক্ত এবং সর্বোপরি ন্যায় ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে দ্বীপবাসীকে একটি শান্তিপূর্ণ কুতুবদিয়া উপহার দিবেন এইটাই দ্বীপবাসীর প্রত্যাশা।